

কামরুল ইসলাম বাবু ঃ
দেশে একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হালদা নদীর দুই পাড়ে চলছে রেণু ফোটানোর মহাযজ্ঞ।
সরজমিনে দেখা যায় হ্যাচারী ও মাটির কুয়ায় রেণু পরিচর্যাকাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন ডিম আহরণকারীরা। এর আগে গত শুক্রবার পঞ্চম জো’র শেষ দিন বিকেল ৫টা পর্যন্ত সংগৃহীত ডিমগুলো হ্যাচারী ও মাটির কুয়ায় রেখে রেণু ফোটানোর কাজ শুরু করেন আহরণকারীরা।
ভারি বর্ষণ ও বজ্রপাত উপেক্ষা করে বহু বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বিশেষ পক্রিয়ায় রেণু ফোটানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। উপজেলা মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে পঞ্চম জো’র বৃহস্পতিবার রাত ও শুক্রবার দিনে হালদা নদী থেকে প্রায় ৪ হাজার কেজি নিষিক্ত ডিম আহরণ করা হয়েছে। এসব ডিম থেকে রেণু ফোটানো হচ্ছে রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলার ৪টি সরকারি হ্যাচারীর পাকাা কুয়া ও সনাতন পদ্ধতির ৬৪টি মাটির কুয়ায়। তবে দুই উপজেলায় সরকারি চারটি হ্যাচারিসহ ১১০টি মাটির কুয়া প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। ডিম আহরণকারীদের মতে, ডিম সংগ্রহের ৪/৫দিনের মাথায় রেণুতে পরিণত হয়, ১৫ দিনের বেশি সময় পর পরিণত হয় পোনায়। তবে হালদা ডিম ছাড়ার ৪/৫দিন পর হ্যাচারী বা মাটির কুয়ায় রেণু ফোটলে এক সপ্তাহের মধ্যে রেণু বিক্রি উৎসব শুরু হয়। ৪০ কেজি ডিম থেকে ১ কেজি রেণু হয়। এক কেজি রেণু থেকে প্রায় আড়াই লাখ পোনা উৎপাদন হয়।
হালদা বিশেষজ্ঞদের মতে, ৬০ কেজি ডিমে ১ কেজি রেণু উৎপাদন হয়। পরিবেশ-পরিস্থিতিতে কম-বেশি হতে পারে। ডিম আহরণকারী কামাল সওদাগর বলেন, ‘ অত্যাধুনিক সুবিধা সম্বলিত আইডিএফ’র ১০টি হ্যাচারী সিস্টেম, ১০টি মাটির কুয়া ও ৫টি পাকা গোল কুয়া রয়েছে। সেখানেসহ আরও একটিতে তিনি রেণু ফুটাচ্ছেন। ইতোমধ্যে ডিম থেকে রেণু ফোটেছে, ক্ষদ্র ক্ষুদ্র রেণু দৃশ্যমান হয়েছে। বুধবার থেকে রেণু বিক্রি শুরু হবে।’ রাউজান উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা পীযুষ প্রভাকর বলেন, ‘ভারি বর্ষণ হচ্ছে। যদি মাটির কুয়াগুলোতে অতিরিক্ত পানি ঢুকে যায় ক্ষতির সম্ভাবনা আছে। তবে এখনো পর্যন্ত কোনো মাটির কুয়ায় পানি ঢুকেনি। ডিম থেকে রেণু উৎপাদন কার্যক্রম চলছে।’
হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাণী বিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘মাটির কুয়ায় রেণু ফোটানোর কাজ চলছে। ডিম থেকে রেণু ফোটেছে, এখনো পরিপূর্ণ নয়। আগামী ২৩ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত আরও একটি জো আছে। সেটি শেষ জো। যদি পঞ্চম জো’তে ছাড়া ডিম পূর্ণাঙ্গ ডিম হয়ে থাকে তাহলে আগামীতে যে জে রয়েছে সেটিতে ডিম ছাড়বে না মা মাছ। ভারি বর্ষণ; রেণুতে প্রভাব পড়বে কিনাÑ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদি বন্যা হয় বা কোনোভাবে মাটির কুয়ায় পানি ঢুকে, তাহলে ক্ষতি হতে পারে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাতে ও শুক্রবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত জোয়ার-ভাটায় তিন শতাধিক নৌকা ও বাঁশের ভেলা নোঙর করে জাল ফেলে ডিম আহরণ করেন ৫শতাধিক ডিম আহরণকারী। গত জো’তে সংগৃহীত সাড়ে ৩ হাজার কেজি ডিম থেকে রেণু উৎপাদন হয় ৬০ কেজি। প্রতিকেজি রেণু বিক্রি হয় ১লাখ ৬০ হাজার থেকে ২লাখ টাকা পর্যন্ত।

-
07/01/2022 16
-
07/01/2022 159
-
06/25/2022 68
-
06/22/2022 528
-
06/22/2022 39
-
06/22/2022 528
-
06/21/2022 227
-
06/22/2022 199
-
07/01/2022 159
-
06/11/2022 103
ফিচার নিউজ

রাউজান সংবাদ

শিক্ষাঙ্গন

LEAVE A COMMENT