অামির হামজা (রাউজান নিউজ)♦
রাউজানে মশার যন্ত্রণা!
ছোট ছোট অাকারে মশা যে হারে বেড়ে চলছে, এসব মশা পিঁপড়ার মত যদি অামাদের টেনে নিতে পারত তাহলে কত মানুষকে যে মশা গুম করে ফেলত তাঁর হিসাব দেয়া খুব মনে হয় সহজ কাজ হত না! কথাটি যদিও একটু হাস্যকর মনে হলেও বর্তমানে রাউজানে প্রতিটি এলাকায় সাম্প্রতিক মশার উৎপাত দেখলে এমনটা ধারণা করা খুব বেশি অযৌক্তিক বলে মনে হবে না। তবে মশা কাউকে গুম না করলেও ঠিকমত প্রতিটি মানুষকে ঘুমাতে দিচ্ছে না। এর ছোট মুখে বে-বে অার গুন-গুন করা গান গুলো যেন দেশের বড় বড় শিল্পীদের হার মানাতে সক্ষম হবে। যদিও শিল্পীদের গানে মধুর কষ্ঠে অামরা সূর শুনতে পাই। কিন্তু এসব মশার অসাধারণ গান গুলো অামাদের মারাত্মক বিরক্তিকর করে তুলে।
অধিকাংশ মানুষ এসব মশা থেকে কিছূটা রক্ষা পেতে বাজার থেকে মশা নিধক করা কয়েল, স্প্রে কিংবা অন্যসব সরঞ্জামও মশাকে যেন ধমাতে পারছে না। ‘মশা নিধক ঔষদ গুলো বাজার থেকে ক্রয় করে বাড়িতে এনে, ‘মনে হচ্ছে মশা মাড়তে গিয়ে নিজেরা এসব মশার ঔষদে মড়ছি। কারণ এসব কয়েল বা অন্যান্য কিছূতেও মশা নিধন হওয়ার পরির্বতে তাঁরা এগুলোর সাথে ছুটিয়ে মনের সূরে খেলা করছে!
এবার না হয় কয়েল বাদ দিলাম কিন্তু অধিকাল থেকে মানুষ মশারি ব্যবহার করে রক্ষা পেত মশা থেকে। কিন্তু বর্তমান যুগে দেখাযায় মশারি খাঁটিয়ে বসে থাকলেও শেষ রক্ষা নাই! যেন বিশ্বের কোনো প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত বাহিনী যেমন অতি সংগোপনে শত্রুর দেশে প্রবেশ করে তেমনি মশাও যে কোন ফাঁকে কোন ফোকর দিয়ে মশারীর মধ্যে প্রবেশ করে তা লক্ষ্যই রাখা যায়না। তবে ফাঁক ও ফোকর দিয়ে মশারির মধ্যে প্রবেশ করতে না পারলেও মশারীর বাইরে বসে ঠিক কাছাকাছি অবস্থানে থেকে এমনভাবে অসমাপ্ত গুন-গুন শব্দ শুরু করছে তা শুনে যেন মনে হচ্ছে , দেশবাসীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে স্লোগান দিচ্ছে। মশা অামাদের রক্তশোষার সাথে সাথে মানুষের শরীরের মধ্যে এমনভাবে রোগ-জীবানুর ছড়িয়ে দিচ্ছে যা অনেক সময়ে মানুষের মৃত্যর কারণ হয়।
চট্টগ্রামের মানুষরা অনেক সময় কথায় কথায় বলে,‘মশা মারতে অডা কামান লাইবুনি কি,। তবে মশা মাড়তে কামান দাগা’র মত সাংঘাতিক বড় বড় আয়োজন করলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। অবশ্য কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে হাজার হাজার কামান বা গোলা মশা নিধক রাসয়নিক পণ্য দিয়েও যদি মশার কবল থেকে রক্ষা পাওয়া যেত! তবে মানুষের অবস্থা দেখে যেন মনে হয়, ক্ষুদ্র মশার বিরুদ্ধে মানুষ যত প্রকার কলা-কৌশল অবলম্বন করুক না কেন তাতে মশার কিছু যায় আসে অার যাই না। বরং মশা আরও মারাত্মকভাবে মানুষের ওপর অক্রম্যতন্ত্র হয়েছ।
শীতের মৌসুম শেষ হতে না হতেই শুরু হয়েছে গরমের মৌসুম শুরু হওয়ার সাথে সাথে মশার উৎপাতও এমন মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে যে দৃশ্য গত কয়েক দশকে দেশের মানুষ দেখেনি।
শুধু গরমের মওসুমেই নয় বরং শীতের মওসুমেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মশা মানুষকে মারাত্মকভাবে অতিষ্ঠ করে তুলে। মশারা সাধারণত দিনের বেলায় জনসম্মূখে বের হত না। কিন্তু বর্তমানে এসব মশা সে লজ্জাটুকুও ত্যাগ করে মানুষের রক্ত চোষে সর্ব-কালের যেন বড় রাজা হয়েছে। তবে এখন মশার কাছে দিন আর রাতের মধ্যে খুব বেশি একটা পার্থক্য নেই।
তবে দিন-রাতের মধ্যে সন্ধ্যার সময়টাই মশার কাছে খুব প্রিয়। তাইতো সন্ধ্যা ঘনাতেই মশার উৎপাত চরমভাবে বেড়ে যায় । মশার যন্ত্রনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যার পরে শিক্ষার্থীরা পড়ালেখার মনযোগী হবে না মশা তাড়াতে ব্যস্ত হবে তা ঠিক করতেই রাতের একাংশ কেটে যায়।
“একজন শিক্ষার্থী তাঁর ফেইসবুক স্ট্যাটাসে লিখছেন, সামনে অামার এইচএসসি পরিক্ষা কি পড়বো কি লিখবো মশার যন্ত্রা অতিষ্ট হয়ে যাচ্ছি, মনে হচ্ছে অামার কলেজের প্রধাণ শিক্ষক অামাকে মশা দিয়ে কামড়াই কামড়াই পড়তে বলছে।”
স্থানীয় লোকজন বলেছেন, রাতে দিনে যে হারে মশা বেড়েছে মনে হচ্ছে দেশের মানুষের অসহায় কোনো মানুষকে রক্ত দিতে প্রয়োজন হবেনা, কারণ সব রক্ত মশা নিয়ে যাচ্ছে। মশা নিধনে যদি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহন করা না হয় তবে এলাকার সর্বনাশ হয়ে যাবে।
রাউজান নিউজ/অামির হামজা, বার্তা বিভাগ
Add comment